ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে চেয়ারম্যান, যুবলীগ নেতা ও ইউপি সদস্য কর্তৃক নগ্নভাবে নির্যাতনের শিকার সেই নারী আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বর্তমানে তিনি সেখানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এর আগে, গত রবিবার সন্ধ্যায় ওই নারীকে বাড়ি থেকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে চেয়ারম্যান আলাল মাস্টার, যুবলীগ নেতা রায়হান ও ইউপি সদস্য আনিসুর উলঙ্গ করে নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ ঘটনার পর তাদের (চেয়ারম্যান, যুবলীগ নেতা ও ইউপি সদস্য) বাধার মুখে সোমবার সন্ধ্যায় গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিনি।
বুধবার বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যান আলাল মাস্টার, যুবলীগ নেতা রায়হান ও ইউপি সদস্য আনিসুরের নজর পড়ে আমার বসত-বাড়ির ওপর। বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখাত তারা। এরপর তারা দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। সেটা না দেয়ায় আমাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করেছে।
তিনি জানান, চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মাস্টারের পা ধরে বার বার আকুতি করলেও তাকে ছাড়েননি। একের পর এক লাথি মেরেছেন।
অন্যদিকে এ ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে জড়িতরা এলাকার কিছু সহজ সরল মানুষকে দিয়ে বুধবার দুপুরে ওই নারীর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে।
প্রতিবেশীরা অভিযোগ করে জানান, ওই নির্যাতিত নারীকে সমাজের কাছে হেয় করার জন্য একটি মহল নানা রকম কুৎসা রটাচ্ছে।
সরেজমিনে জগন্নাথপুর এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, স্বামী পরিত্যক্ত হওয়ার পর ওই নারী বাড়ির সামনে একটি দোকান চালাতো। ব্যবসার খাতিরে খোঁচাবাড়ী হাটের ব্যবসায়ী ও গৌরীপুর গ্রামের প্রমথ চন্দ্র রায়ের সঙ্গে ওই নারীর ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ওই নারী যে জমির ওপর বসতভিটা গড়ে তুলেছিল সেই জমির ওপর চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য আনিসুরের নজর পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে ওই জমি দখলের জন্য নানাভাবে কৌশল করতে থাকেন চেয়ারম্যান, মেম্বার ও স্থানীয় যুবলীগ নেতারা। ভিটে মাটি ছাড়ার জন্য ইতোপূর্বে একাধিকবার হুমকিও দেন চেয়ারম্যানের লোকজন। ছেড়ে না দিলে দুই লাখ টাকা দাবিও করা হয়। সেই কথায় রাজি না হলে গৌরীপুর গ্রামের প্রমথ চন্দ্র রায়ের সঙ্গে ওই নারীর অবৈধ সম্পর্ক বলে এলাকাবাসীর কাছে কিছু সুবিধাভোগী মানুষ নানা কথা ছড়ায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে এ কথা বলেছেন।
এরপর রবিবার রাতে জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আলালের নির্দেশে যুবলীগ নেতা রায়হানের কর্মীরা তিন সন্তানের ওই জননীকে তুলে নিয়ে যায়। পরে পরিষদে তাকে নগ্ন করে নির্যাতন করা হয়েছে বলে বলে ভুক্তভোগী ওই নারী জানিয়েছেন।
একই সময়ে খোঁচাবাড়ী হাটের ব্যবসায়ী ও গৌরীপুর গ্রামের প্রমথ চন্দ্র রায়কেও সন্ত্রাসীরা তুলে নিয়ে নির্যাতন করেন। এ ঘটনার নেতৃত্ব দেন যুবলীগ নেতা রায়হান, ইউপি সদস্য আনিসুর রহমান, কেদারনাথ রায় ও নারী সদস্য মালেকা বেগম।
হাসপাতালে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ওই নারী জানান, ''প্রমথ চন্দ্র রায়কে আমি দাদা মনে করি। কিন্তু চেয়ারম্যানের লোকজন নানা রকম কথা ছড়াচ্ছে আমাদের বিষয়ে। মেম্বার ও চেয়ারম্যান আমার বসতভিটার জমির জন্য এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। পরিষদে ডেকে নগ্ন করে সবার সামনে আমাকে নির্যাতন করেছে। চেয়াম্যানের পা ধরে আকুতি করলেও তিনি আমাকে বেধড়ক মারপিট করেন। আমি যাতে মামলা না করতে পারি সেজন্য নানাভাবে হুমকি প্রদান করছে চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতারা। ''
নির্যাতিত নারীর ছোট মেয়ে জানায়, ''টিপ-সই দেয়ার নাম করে তার মাকে বাড়ি থেকে জোর করে নিয়ে যায় চেয়ারম্যানের লোকজন। এছাড়া বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেয়া হয়। না হলে দুই লাখ টাকা দিতে হবে। ''
গৌরীপুর গ্রামের প্রমথ চন্দ্র রায়ের অভিযোগ, তাকেও একই সময়ে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয় এবং টাকা দাবি করা হয়। ওই নারীর সঙ্গে আমার নাকি অবৈধ সম্পর্ক সে কারণে চেয়ারম্যান টাকা দাবি করেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য আনিসুর রহমান ও কেদারনাথ রায় জানান, ওই দু'জনের বিরুদ্ধে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে। আর যুবলীগ নেতা রায়হান জানান, ওই নারী আমাদের এলাকার মানসম্মান নষ্ট করেছে। তাই তাকে এলাকার মানুষ শাসন করেছে।
ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আলাল বলেন, সব কিছু মিথ্যা। ওই নারীর বিরুদ্ধে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে। তাই তাকে পরিষদে আনা হয়ছিল। সাধারণ মানুষ তাকে মারপিট করেছে। টাকা দাবির বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন।
ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের ওসি মশিউর রহমান বলেন, মঙ্গলবার রাতে তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। এ ঘটনায় ওই নারী হাসপাতালে রয়েছেন। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
Source : Bangladesh Pratidin
এর আগে, গত রবিবার সন্ধ্যায় ওই নারীকে বাড়ি থেকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে চেয়ারম্যান আলাল মাস্টার, যুবলীগ নেতা রায়হান ও ইউপি সদস্য আনিসুর উলঙ্গ করে নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ ঘটনার পর তাদের (চেয়ারম্যান, যুবলীগ নেতা ও ইউপি সদস্য) বাধার মুখে সোমবার সন্ধ্যায় গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিনি।
বুধবার বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যান আলাল মাস্টার, যুবলীগ নেতা রায়হান ও ইউপি সদস্য আনিসুরের নজর পড়ে আমার বসত-বাড়ির ওপর। বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখাত তারা। এরপর তারা দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। সেটা না দেয়ায় আমাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করেছে।
তিনি জানান, চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মাস্টারের পা ধরে বার বার আকুতি করলেও তাকে ছাড়েননি। একের পর এক লাথি মেরেছেন।
অন্যদিকে এ ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে জড়িতরা এলাকার কিছু সহজ সরল মানুষকে দিয়ে বুধবার দুপুরে ওই নারীর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে।
প্রতিবেশীরা অভিযোগ করে জানান, ওই নির্যাতিত নারীকে সমাজের কাছে হেয় করার জন্য একটি মহল নানা রকম কুৎসা রটাচ্ছে।
সরেজমিনে জগন্নাথপুর এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, স্বামী পরিত্যক্ত হওয়ার পর ওই নারী বাড়ির সামনে একটি দোকান চালাতো। ব্যবসার খাতিরে খোঁচাবাড়ী হাটের ব্যবসায়ী ও গৌরীপুর গ্রামের প্রমথ চন্দ্র রায়ের সঙ্গে ওই নারীর ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ওই নারী যে জমির ওপর বসতভিটা গড়ে তুলেছিল সেই জমির ওপর চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য আনিসুরের নজর পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে ওই জমি দখলের জন্য নানাভাবে কৌশল করতে থাকেন চেয়ারম্যান, মেম্বার ও স্থানীয় যুবলীগ নেতারা। ভিটে মাটি ছাড়ার জন্য ইতোপূর্বে একাধিকবার হুমকিও দেন চেয়ারম্যানের লোকজন। ছেড়ে না দিলে দুই লাখ টাকা দাবিও করা হয়। সেই কথায় রাজি না হলে গৌরীপুর গ্রামের প্রমথ চন্দ্র রায়ের সঙ্গে ওই নারীর অবৈধ সম্পর্ক বলে এলাকাবাসীর কাছে কিছু সুবিধাভোগী মানুষ নানা কথা ছড়ায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে এ কথা বলেছেন।
এরপর রবিবার রাতে জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আলালের নির্দেশে যুবলীগ নেতা রায়হানের কর্মীরা তিন সন্তানের ওই জননীকে তুলে নিয়ে যায়। পরে পরিষদে তাকে নগ্ন করে নির্যাতন করা হয়েছে বলে বলে ভুক্তভোগী ওই নারী জানিয়েছেন।
একই সময়ে খোঁচাবাড়ী হাটের ব্যবসায়ী ও গৌরীপুর গ্রামের প্রমথ চন্দ্র রায়কেও সন্ত্রাসীরা তুলে নিয়ে নির্যাতন করেন। এ ঘটনার নেতৃত্ব দেন যুবলীগ নেতা রায়হান, ইউপি সদস্য আনিসুর রহমান, কেদারনাথ রায় ও নারী সদস্য মালেকা বেগম।
হাসপাতালে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ওই নারী জানান, ''প্রমথ চন্দ্র রায়কে আমি দাদা মনে করি। কিন্তু চেয়ারম্যানের লোকজন নানা রকম কথা ছড়াচ্ছে আমাদের বিষয়ে। মেম্বার ও চেয়ারম্যান আমার বসতভিটার জমির জন্য এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। পরিষদে ডেকে নগ্ন করে সবার সামনে আমাকে নির্যাতন করেছে। চেয়াম্যানের পা ধরে আকুতি করলেও তিনি আমাকে বেধড়ক মারপিট করেন। আমি যাতে মামলা না করতে পারি সেজন্য নানাভাবে হুমকি প্রদান করছে চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতারা। ''
নির্যাতিত নারীর ছোট মেয়ে জানায়, ''টিপ-সই দেয়ার নাম করে তার মাকে বাড়ি থেকে জোর করে নিয়ে যায় চেয়ারম্যানের লোকজন। এছাড়া বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেয়া হয়। না হলে দুই লাখ টাকা দিতে হবে। ''
গৌরীপুর গ্রামের প্রমথ চন্দ্র রায়ের অভিযোগ, তাকেও একই সময়ে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয় এবং টাকা দাবি করা হয়। ওই নারীর সঙ্গে আমার নাকি অবৈধ সম্পর্ক সে কারণে চেয়ারম্যান টাকা দাবি করেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য আনিসুর রহমান ও কেদারনাথ রায় জানান, ওই দু'জনের বিরুদ্ধে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে। আর যুবলীগ নেতা রায়হান জানান, ওই নারী আমাদের এলাকার মানসম্মান নষ্ট করেছে। তাই তাকে এলাকার মানুষ শাসন করেছে।
ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আলাল বলেন, সব কিছু মিথ্যা। ওই নারীর বিরুদ্ধে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে। তাই তাকে পরিষদে আনা হয়ছিল। সাধারণ মানুষ তাকে মারপিট করেছে। টাকা দাবির বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন।
ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের ওসি মশিউর রহমান বলেন, মঙ্গলবার রাতে তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। এ ঘটনায় ওই নারী হাসপাতালে রয়েছেন। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
Source : Bangladesh Pratidin